২৩শে মে, ২০২৫ ইং, ৯ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৪শে জিলক্বদ, ১৪৪৬ হিজরী

হলি আর্টিজানে হামলা জঙ্গিদের ছিল দীর্ঘ পরিকল্পনা-প্রশিক্ষণ

মাদারল্যান্ড নিউজ ডেস্ক: রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজানে হামলার আগে দীর্ঘ পরিকল্পনা করেন নব্য জেএমবির সদস্যরা। তাঁরা উত্তরবঙ্গে পরিকল্পনা নিয়ে ঢাকায় বাস্তবায়ন করেন। পরিকল্পনায় নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক তামিম চৌধুরী। তাঁর সঙ্গে এ পরিকল্পনায় জেএমবির আরেক শীর্ষ নেতা সরোয়ার জাহান ছাড়াও ছিলেন নুরুল ইসলাম মারজান। জঙ্গিবিরোধী বিভিন্ন অভিযানে নিহত হয়েছেন এঁরা।
এ হামলা চালাতে কয়েকজন জঙ্গিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পাঁচজন হলি আর্টিজানে হামলা চালান। হামলার পর পরিচালিত অপারেশন থান্ডারবোল্টে নিহত হন এ পাঁচজন। আর হামলা পরিকল্পনায় জড়িত অন্য আটজন জীবিত আছেন। এ আটজন এখন বিচারের মুখোমুখি। হলি আর্টিজান হামলার ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা মামলায় এঁদের বিচারের রায় ঘোষণা করা হবে আগামীকাল বুধবার।
হামলার পরিকল্পনা : হলি আর্টিজানে হামলার পরিকল্পনা হয় কয়েক স্তরে। নব্য জেএমবির সদস্যরা মিলিত হয়ে সিদ্ধান্ত নেন দেশ-বিদেশে ব্যাপক প্রচার পাওয়ার পাশাপাশি নিজেদের শক্তি সম্পর্কে জানান দেওয়ার। এ কারণে কূটনৈতিক পাড়ায় হামলা চালিয়ে বিদেশিদের হত্যা করেন তাঁরা। হলি আর্টিজানে হামলার আগে জঙ্গি সদস্যরা গুলশান পার্ক, বড় মার্কেটগুলোয় রেকি করেন। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে এই রেকি করা হয়। কিন্তু একসঙ্গে অনেক বিদেশিকে হত্যা করা যাবে না বলে তাঁরা ওই সব স্থানে হামলার সিদ্ধান্ত পাল্টান। পরে খোঁজখবর নিয়ে হলি আর্টিজানে হামলার সিদ্ধান্ত নেন। হলি আর্টিজান মামলার চার্জশিটে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
চার্জশিটে বলা হয়, পরিকল্পনার প্রথম অংশ হিসেবে হলি আর্টিজানে হামলা চালাতে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে সিদ্ধান্ত নেয় নব্য জেএমবি। এর পরই বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা জঙ্গিরা ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে একত্র হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
ওই মাসের শেষ দিকে গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা থানার বোনারপাড়া বাজার কলেজ মোড়ে সাখাওয়াত হোসেন শফিক ও বাইক হাসানের ভাড়া বাসায় তামিম আহমেদ চৌধুরী, মেজর (অব.) জাহিদুল ইসলাম, সরোয়ার জাহান, রায়হানুল ইসলাম রায়হান, নুরুল ইসলাম মারজান, শরিফুল ইসলাম খালেদ, জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী একত্র হয়ে বৈঠক করে গুলশান হলি আর্টিজানে আত্মঘাতী হামলার পরিকল্পনা নেন। ওই বৈঠকে আরো সিদ্ধান্ত হয়, সন্ত্রাসী হামলায় দেশি-বিদেশিদের হত্যার মূল সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করবেন তামিম আহমেদ চৌধুরী। আসামি জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধীর ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারার জবানবন্দি থেকে এটি জানা যায়।
পরে মার্চ মাসে তামিম আহমেদ চৌধুরী ও শরিফুল ইসলাম খালেদ কল্যাণপুরের ৫ নম্বর রোডের ৬/এ নম্বর বাড়ির তৃতীয় তলায় আসামি আসলাম হোসেনের ভাড়া বাসায় যান। সেখানে আসামিরা রমজান মাসে ঢাকার কূটনৈতিক পাড়ায় বড় ধরনের হামলা চালানোর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন। আসলাম হোসেন র‌্যাশ তখন তামিম আহমেদ চৌধুরীর কাছে গুলশানে কূটনৈতিক পাড়ায় হামলা চালানোর উদ্দেশ্য জানতে চান। তামিম চৌধুরী জানান, নব্য জেএমবি আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএস দ্বারা অনুপ্রাণিত। আইএসের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে গুলশানে কূটনৈতিক পাড়ায় হামলা চালানো প্রয়োজন। তিনি আরো জানান, সংগঠনের সিদ্ধান্ত, তাঁর নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের নিয়ে হামলা চালাতে হবে। গুলশানে হামলার পরিকল্পনায় আসলাম হোসেন র‌্যাশ ও শরিফুল ইসলাম খালেদ সমর্থন জানান। চার্জশিটে আসলাম হোসেন র‌্যাশের জবানবন্দিতে এ তথ্য রয়েছে।
এরপর ২০১৬ সালের মে মাসে জেএমবির গুরুত্বপূর্ণ নেতা আসামি আব্দুস সবুর খান নব্য জেএমবিতে যোগ দিয়ে রমজান মাসের প্রথম দিকে তামিম চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করতে ঢাকায় এসে মিরপুরে একটি বাসায় ওঠেন। ওই বাসায় রাতে তামিম চৌধুরী ও বাশারুজ্জামান চকলেট তাঁকে নিয়ে ইমান ও আকিদা প্রসঙ্গে আলোচনা করেন। আলোচনায় সন্তুষ্ট হয়ে সবুর খানকে নব্য জেএমবির শুরা সদস্য করা হয়। নব্য জেএমবির শুরা সদস্যরাই সব ধরনের হামলার অনুমোদন দেন।
এরপর তামিম চৌধুরী, বাশারুজ্জামান চকলেট, আব্দুস সবুর খান ও অন্যরা গুলশানে হলি আর্টিজানে হামলার পরিকল্পনা এগিয়ে নিতে থাকেন। হামলায় লোক সংগ্রহ, অস্ত্র ও গ্রেনেড সরবরাহ করতে আব্দুস সবুর খানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আইডি খুলে নব্য জেএমবির মারজান এবং হাদিসুর রহমান সাগরসহ অন্য সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন সবুর খান। হলি আর্টিজানে সন্ত্রাসী হামলা সফল করতে পরিকল্পনামাফিক কাজ করতে থাকেন তিনি। আসামি আব্দুস সবুর খানের ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় প্রদত্ত স্বীকারোক্তি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
হলি আর্টিজানে হামলা চালাতে সবুর খান দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সদস্য সংগ্রহ করে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করতে থাকেন। তিনি তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তিতে দক্ষ। সবুর খান থ্রিমা, টেলিগ্রাম, উইকার, চ্যাট সিকিউর, ফেসবুকের মাধ্যমে জেএমবির বিভিন্ন সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করে হামলাকারীদের নিয়োগ দেন। নিয়োগ দেওয়া সদস্যদের প্রতিটি দলে পাঁচ থেকে সাতজনকে রাখা হয়। ওই দলগুলোকে বিভিন্ন স্থানে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষে পাঁচজনকে হলি আর্টিজানে হামলার জন্য বেছে নেওয়া হয়। ওই পাঁচজনকে কয়েক দফায় হামলার আগে হলি আর্টিজানে পাঠানো হয়। হলি আর্টিজানের আশপাশের রাস্তা, বিভিন্ন স্থাপনা, দোকান রেকি করেন তাঁরা।
এরপর হলি আর্টিজানের পাশের একটি বাসায় কিভাবে হলি আর্টিজানে প্রবেশ করবেন, কার আগে কে প্রবেশ করবেন, কার ভূমিকা কী হবে ইত্যাদি নিয়ে তামিম চৌধুরীর পরামর্শে রিগেনসহ অন্যরা পরিকল্পনা করেন। এর আগে অস্ত্র ও বিস্ফোরক সংগ্রহ, অর্থ সংগ্রহের পরিকল্পনা হয় কল্যাণপুরের একটি বাসায়। নব্য জেএমবির শুরা সদস্যরা অর্থ ও অস্ত্র সংগ্রহ করবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়।
চার্জশিটে বলা হয়, নব্য জেএমবির বিভিন্ন বৈঠকে ছয়টি বিষয় নিশ্চিত করতে পরিকল্পনা হয়। সেগুলো হচ্ছে সমমনা জেএমবি উগ্রবাদী সন্ত্রাসীদের নিয়ে তামিম চৌধুরীর নেতৃত্বে নব্য জেএমবি গঠন, ঢাকার কূটনৈতিক পাড়ায় হলি আর্টিজানে হামলা, হলি আর্টিজানে হামলায় অংশগ্রহণকারী সদস্য সংগ্রহ, সংগৃহীত পাঁচ-ছয় সদস্যকে পরিপূর্ণভাবে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করা, আত্মঘাতী হামলার জন্য প্রস্তুত করা, অস্ত্র সংগ্রহ, অর্থ সংগ্রহ, প্রশিক্ষণ শেষে অবস্থান ও ঘটনাস্থল রেকি করা। এভাবে তাঁরা চূড়ান্ত হামলার জন্য প্রস্তুত হন।
প্রশিক্ষণ : হলি আর্টিজানে হামলার আগে প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে বুড়িগঙ্গা নদীতে গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মহড়া দেয় জঙ্গিরা। নব্য জেএমবির সদস্য আসলাম হোসেন র‌্যাশ, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ ওরফে ইলবাবা ও নিবরাস ইসলাম লম্বু ওই বিস্ফোরণ ঘটান। ২০১৬ সালের মে মাসে এই মহড়া দেওয়া হয়। হলি আর্টিজানে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন চার্জশিটে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
তামিম আহমেদ চৌধুরী, সরোয়ার জাহান, নুরুল ইসলাম মারজান, শরিফুল ইসলাম খালেদ, মামুনুর রশিদ রিপন, জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দেন। আসামিদের জবানবন্দি এবং সাক্ষীদের জবানবন্দি থেকে এসব তথ্য উঠে এসেছে চার্জশিটে।
তামিম চৌধুরীর নির্দেশে আসামি আসলাম হোসেন র‌্যাশ হলি আর্টিজানে প্রত্যক্ষ হামলাকারী রোহান ইবনে ইমতিয়াজ ওরফে ইলবাবা এবং নিবরাস ইসলাম ওরফে লম্বুকে ওই বছরের মে মাসে মিরপুর-১০ থেকে সদরঘাট নিয়ে যান। ওই সময় এ জঙ্গিরা মিরপুর-১০ নম্বরের একটি ভাড়া বাসায় থাকত।
জঙ্গি নেতা তামিম চৌধুরী অন্যদের নির্দেশ দেন হামলার লক্ষ্য যেন ব্যর্থ না হয়। সেই কারণে হামলাকারীদের শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুত করা হয়। হামলার আগে মে মাসে আসলাম হোসেন র‌্যাশ, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ ওরফে ইলবাবা ও নিবরাস ইসলাম লম্বু সদরঘাটে গিয়ে ৫০০ টাকায় একটি নৌকা ভাড়া করেন। নৌকাটি তাঁরা বুড়িগঙ্গা নদীর মাঝখানে নিয়ে যান। সেখানে তাঁরা গ্রেনেড নিক্ষেপ করা শেখেন।
চার্জশিট থেকে জানা যায়, প্রথমে আসলাম হোসেন র‌্যাশ একটি গ্রেনেড নদীর মাঝখানে নিক্ষেপ করলে তা বিকট শব্দে ফাটে। বিকট শব্দে ভয় পান নৌকার মাঝি। তিনি জিজ্ঞেস করেন, ‘কী করছেন আপনারা?’ তখন রোহান ইবনে ইমতিয়াজ মাঝিকে ধমক দেন। রোহান মাঝিকে চুপ থাকতে বলেন। ভয় পেয়ে মাঝি তাঁদের কথামতো নৌকা চালান। তাঁরা আরো দুটি গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটান। দ্বিতীয় গ্রেনেডটির বিস্ফোরণ ঘটান রোহান ইবনে ইমতিয়াজ। তৃতীয় বিস্ফোরণটি ঘটান নিবরাস ইসলাম। দ্বিতীয় গ্রেনেডটির বিস্ফোরণ ঘটানোর সময় একটি স্প্লিন্টার নৌকার মধ্যে এসে পড়ে। সেটির আঘাতে রোহান ইবনে ইমতিয়াজ আহত হন। সদরঘাটের একটি ওষুধের দোকান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন রোহান। পরে তাঁরা মিরপুর-১০-এ চলে যান।
প্রশিক্ষণ চলে ধাপে ধাপে : ২০১৬ সালের ১ জুলাই হলি আর্টিজানে হামলার আগে হমলাকারীদের প্রশিক্ষণ চলে ধাপে ধাপে। ঢাকা শহরের বিভিন্ন ভাড়া বাসায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। হলি আর্টিজানে হামলায় অংশ নেওয়া মীর সামেহ মোবাশ্বের ছদ্মনাম হাসান, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ ছদ্মনাম রতন, নিবরাস ইসলাম, খায়রুল ইসলাম পায়েল ছদ্মনাম বাঁধন, শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বলসহ অন্যরা ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে মিরপুরের মধ্যপাইকপাড়ার একটি বাসার চতুর্থ তলায় দ্বিতীয় ব্যাচের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ওই প্রশিক্ষণে আসামি রাকিবুল হাসান রিগেন, নুরুল ইসলাম মারজানসহ অন্যরা প্রশিক্ষণ দেন।
প্রশিক্ষকরা প্রশিক্ষণার্থীদের কোরআন-হাদিসের উদাহরণ উল্লেখ করে জিহাদ সম্পর্কিত অংশের অপব্যাখ্যা দিতেন। প্রশিক্ষণার্থীদের কোরআন-হাদিসের অপব্যাখ্যা দিয়ে তাঁদের ইশতিহাদি (সুইসাইডাল) স্কোয়াডে অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুত করেন।
প্রশিক্ষণের স্থানকে কোচিং সেন্টার হিসেবে আখ্যায়িত করা হতো। কোচিং সেন্টারের সার্বিক দায়িত্বে ছিলেন তামিম চৌধুরী ও শরিফুল ইসলাম খালেদ। তামিম চৌধুরীর পরিকল্পনায় ২০১৬ সালের মে মাসের প্রথম সপ্তাহে শরিফুল ইসলাম খালেদকে গাইবান্ধার সাঘাটা থানার যমুনার চর বা ফুলছড়ি চরে সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তাঁর সঙ্গে হলি আর্টিজানে হামলাকারীরাও ছিলেন। ওই সামরিক প্রশিক্ষণে রায়হানুল কবির রায়হান, মেজর (অব.) জাহিদসহ অন্যরা প্রশিক্ষণ দেন। এরপর তাঁরা উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে এবং ঝিনাইদহের বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসী কাজ চালিয়ে বাস্তব জ্ঞান অর্জন করেন।
সব প্রশিক্ষণ শেষে হলি আর্টিজানে হামলাকারী ইশতিহাদি (সুইসাইডাল) পাঁচ সদস্য গুলশানের পাশে একটি বাসায় অবস্থান করে হামলার জন্য প্রস্তুত হন। তামিম চৌধুরীর নির্দেশে রাকিবুল হাসান রিগেন ২০১৬ সালের জুন মাসে ওই বাসায় গিয়ে হামলাকারীদের প্রশিক্ষণ দেন। এ ছাড়া রিগেন ১ জুলাইয়ের আগের সপ্তাহে জুনের শেষ দিকে ওই বাসায় অবস্থান করে হামলাকারীদের সর্বশেষ প্রস্তুতি হিসেবে হামলার আগ পর্যন্ত প্রশিক্ষণ দেন।

Share Button


     এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ